প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র (Peripheral nervous system) (10.3.2)

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - জীববিজ্ঞান (নতুন সংস্করণ) সমন্বয় | - | NCTB BOOK
130
130

মস্তিক্ষ থেকে 12 জোড়া এবং মেরুমজ্জা বা সুষুম্নাকান্ড থেকে 31 জোড়া স্নায়ু বের হয়ে আসে এবং সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর শাখায় বিভক্ত হয়ে সর্বাঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। এগুলোকে একত্রে প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র বলে। মস্তিক্ষ থেকে উৎপন্ন করোটিক স্নায়ু চোখ, নাক, কান, জিহ্বা, দাঁত, মুখমন্ডল, হৃৎপিন্ড, পাকস্থলী প্রভৃতি অঙ্গের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। মেরুরজ্জু থেকে উদ্ভুত স্নায়ুগুলো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চালনা করে এবং দেহের বাকি অংশ থেকে যাবতীয় অনুভূতি মস্তিক্ষে বয়ে নিয়ে যায়।


স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র (Autonomic nervous system)
যেসব অঙ্গের উপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, সেগুলো স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্দ্র দিয়ে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। দেহের ভিতরের অঙ্গগুলো, যেমন: হৃৎপিণ্ড, অস্ত্র, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয় ইত্যাদির কাজ স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র দিয়ে পরিচালিত হয়। এসব তন্ত্রের কার্যকারিতার উপর মস্তিষ্ক ও মেরুরজ্জুর প্রত্যক্ষ প্রভাব না থাকায় এরা অনেকটা স্বাধীন এবং স্বভন্নভাবে আপন কর্তব্য সম্পাদন করে।

উদ্দীপনা সঞ্চালন (Transmission of Impulse)
পরস্পর সংযুক্ত অসংখ্য নিউরন তক্ষুর ভিতর দিয়ে উদ্দীপনা বা তাড়না শেষ পর্যন্ত মস্তিষ্কে পৌঁছায়। প্রতি সেকেন্ডে এর বেগ প্রায় 100 মিটার তবে স্নায়ুর ধরনভেদে এর তারতম্য হতে পারে। পরিবেশ থেকে যে সংকেত স্নায়ুর ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মস্তিষ্কে পৌঁছে তাকে স্নায়ু তাড়না বা উদ্দীপনা বলে। নিউরনের কার্যকারিতার ফলে উদ্দীপনা প্রয়োজনীয় অঙ্গগুলোতে সঞ্চালিত হয়। এটি মাংসপেশিতে সঞ্চালিত হলে পেশি সংকুচিত হয়ে সাড়া দেয়। ফলে প্রয়োজনমতো দেহের বিভিন্ন অঙ্গ সঞ্চালিত হয়। এই তাড়না প্রন্থিতে পৌঁছালে সেখানে রস ক্ষরিত হয়। অনুভূতিবাহী স্নায়ু উত্তেজিত হলে সেই উত্তেজনা মস্তিষ্কের দিকে অগ্রসর হয়ে যন্ত্রণাবোধ, স্পর্শজ্ঞান, দর্শন এ ধরনের অনুভূতি উপলব্ধি করায়।

চিত্র 10.08: উদ্দীপনা সঞ্চালন প্রক্রিয়া

স্নায়ু তাড়না কীভাবে কাজ করে তা একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝানো যায়। মনে কর, শিক্ষক শ্রুতলিপি দিচ্ছেন এবং তুমি লিখছ। এক্ষেত্রে পুস্তক থেকে প্রতিফলিত আলো শিক্ষকের চোখের রেটিনায় উদ্দীপনা জাগালে স্নায়ু তাড়নার সৃষ্টি হয়। এটা চোখের স্নায়ু দিয়ে মস্তিষ্কের দৃষ্টিকেন্দ্রে পৌঁছে। সেখান থেকে এ তাড়না পর পর চিন্তাকেন্দ্র, স্মৃতিকেন্দ্র প্রভৃতি হয়ে মুখমন্ডলের ঐচ্ছিক পেশিকে নির্দেশ দেয়। মুখের পেশি সংকুচিত প্রসারিত হয়ে হয়ে সাড়া দেয়। এখানে শিক্ষকের কথা বলার পেশিগুলো হলো প্রধান সাড়া অঙ্গ।
শিক্ষকের কথা বাতাসে শব্দ তরঙ্গ সৃষ্টি করে। এই শব্দ তরঙ্গ ছাত্রের কানের পর্দায় উদ্দীপনা জাগায়, যা শ্রবণস্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কের শ্রবণকেন্দ্রে পৌঁছে। সেখান থেকে তাড়না ছাত্রের স্মৃতিকেন্দ্র, চিন্তাকেন্দ্র প্রভৃতি হয়ে মোটরস্নায়ুযোগে ছাত্রের হাতের ঐচ্ছিক পেশিতে পৌঁছে। নির্দেশে সাড়া দিয়ে হাতের পেশি লিখতে থাকে। এখানে ছাত্রের পেশি হলো প্রধান সাড়া অঙ্গ।

common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion